গুগল কিভাবে একটি ওয়েবপেজ কে র্যাংক করে থাকে?
[vc_row][vc_column][vc_column_text]
সার্চ ইঞ্জিন (যেমন: গুগল, ইয়াহো, বিং) কিভাবে কাজ করে তা না জেনে ওয়েবসাইট কে সার্চ ইঞ্জিন এর জন্য অপটিমাইজ করা আর লিখতে না শিখে জীবনের প্রথম উপন্যাস প্রকাশ করা একই ব্যাপার। সম্পূর্ন নিখুঁতভাবে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন করার জন্য:
সার্চ ইঞ্জিন কিভাবে কাজ করে?,
এর প্রধান কাজ কি কি?
সেগুলো সম্পর্কে সম্যক ধারনা থাকা খুবই জরুরী।
আমরা আমাদের এ আলোচনায় গুগল সার্চ ইঞ্জিন কে বেশী প্রধান্য দিব। আমরা গুগল সার্চ এর খুঁটিনাটি বিষয়গুলো গভীর হতে জানার চেষ্টা করব।
সর্বপ্রথমে গুগল সার্চ ইঞ্জিন সম্পর্কে জানতে আমাদেরকে সার্চ ইঞ্জিনের সাথে সম্পর্কযুক্ত কতগুলো শব্দ সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারনা থাকা খুবই জরুরী।
ইনডেক্স: গুগল তার পরিচিত সব ওয়েবসাইট তার ইনডেস্কে সংরক্ষন করে থাকে। আসলে ইনডেক্সে ওয়েবসাটের প্রতিটি পেজের ইউআরএল এবং বিষয়বস্তু সংরক্ষিত হয়। গুগল যেকোন ওয়েবপেজ পরিদর্শন করে, এর বিষয়বস্তু পড়ে এবং এরপর এর ইনডেক্সে সংরক্ষন করে।
ক্রল: নতুন বা হালনাগাদ ওয়েবপেজ খোঁজার প্রক্রিয়া। আমরা জানি যেকোন ওয়েবসাইট হলো কতগুলো লিংকড পেজের সমষ্টি, গুগল এই লিংক অনুসরন করে অথবা এসএমএল সাইট ম্যাপের (XML Sitemaps) মাধ্যমে অথবা অন্য অনেক মাধ্যম আছে যার সাহায্যে ওয়েবসাইট এর ইউআরএল খুজে বের করে। এটাই ক্রল।
ক্রলার: এটা একটি স্বংয়ক্রিয় সফটওয়্যার, যা ওয়েবসাইট কে গুগলে ইনডেক্স হতে সহায়তা করে।
গুগল বট: গুগল ক্রলার এর সাধারন নাম।
এসইও: সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাজেশন এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে ওয়েবসাইট কে গুগল সার্চ রেজাল্টে প্রথম পেজে নিয়ে আসা হয়। অনেক সময় যিনি এই কাজটি করে তাকেও এসএইও (SEO=Search Engine Optimizer) বলা হয়ে থাকে।
এবার একটু গভীরে যাওয়া যাক গুগল সার্চ ইঞ্জনে যখন আপনি কোন কিছু সার্চ করেন তখন দুই ধরনের আইটেম দেখতে পাবেন:
১. পেইড এ্যাডস।
২. অর্গ্যানিক লিষ্টিং।
এই পেইড এ্যাডস এর জন্য কোম্পানীগুলো গুগল কে টাকা প্রদান করে টাকার উপর ভিত্তি করে তারা গুগল সার্চ রেজাল্ট পেজের ১ম, ২য় বা ৩য় স্থানে থাকে।
অন্যদিকে অর্গ্যানিক লিষ্টিং এর জন্য ওয়েবসাইটের মালিক কোন টাকা গুগল কে প্রদান করে না। তা হলে তারা কি করে? তারা এসইও (Search Engine Optimization) করে।
গুগল সার্চ ইঞ্জন এর ফাংশনগুলি বুঝতে হলে আমাদের অর্গ্যানিক লিষ্টিং নিয়ে কাজ করতে হবে। আর পেইড এ্যাডস এর ক্ষেত্রে গুগল সার্চ ইঞ্জন ফাংশন এর চাইতে প্রেজেন্টেশন বোঝাটা জরুরী (এটা নিয়ে পরে আলোচনা হবে)।
কজেই শুরুতে আমরা গুগল সার্চ এর অর্গ্যানিক লিষ্টিংকে প্রাধান্য দিব।
[/vc_column_text][vc_separator color=”juicy_pink” border_width=”4″][vc_column_text]
কিভাবে গুগল সার্চ কাজ করে?
গুগল অনেকগুলো উৎস হতে তথ্য সংগ্রহ করে থাকে, যেমন:
-ওয়েবপেজ হতে,
-ব্যবহারকারীর প্রদানকৃত ডাটা, তথ্য, কন্টেন্ট যেমন: মাই বিজনেস (My Business),
-বই স্ক্যান করে প্রাপ্ত তথ্য,
-ইন্টারনেটে পাবলিক ডাটাবেজ (Public Database) ,
-এছাড়াও অন্যান্য অনেক সূত্র রয়েছে,
যাইহোক, এই পৃষ্ঠাটি ওয়েবপেজ এর ওপর দৃষ্টিপাত করবে। ওয়েবপেজ থেকে ফলাফল তৈরির জন্য গুগল তিনটি মৌলিক পদক্ষেপ অনুসরণ করে:
-ক্রলিং
-ইনডেক্সিং
-সার্ভিং
ক্রলিং (Crawling): প্রথম ধাপ হল ওয়েবে কোন কোন ওয়েবপেজ বিদ্যমান তা খুঁজে বের করা। গুগলে সকল ওয়েবপেজ এর কোন কেন্দ্রীয় রেজিষ্ট্রির ব্যবস্থা নাই, তাই গুগল কে যা করতে হয় তা হলো ক্রমাগত নতুন ওয়েবপেজ অনুসন্ধান করতে হয় এবং সেগুলিকে তার পরিচিত ওয়েবপেজ এর যে তালিকা আছে সেখানে যুক্ত করতে হয়। কিছু কিছু ওয়েবপেজ আছে যা গুগল এর পরিচিত কারণ গুগল এর আগেও তাদের পরিদর্শন করেছে। অন্য অপরিচিত ওয়েবপেজ আবিষ্কৃত হয় তখন যখন গুগল একটি পরিচিত ওয়েবপেজ থেকে অন্য একটি নতুন ওয়েবপেজ এর লিংক অনুসরণ করে। এছাড়াও, যখন কোনও ওয়েবসাইট এর মালিক গুগল- এর ক্রল করার জন্য ওয়েবপেজ তালিকা (Sitemaps) জমা দেয়, এভাবেও ওয়েবপেজ আবিস্কৃত হয়। আপনি যদি একটি ম্যানেজেবল ওয়েব হোষ্ট (Managed Web Host) ব্যবহার করেন, যেমন উইক্স (Wix) বা ব্লগার (Blogger), এরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে গুগল কে আপনার তৈরি করা ওয়েবপেজ কে ক্রল করতে বলবে।
একবার গুগল কোন ওয়েবপেজ এর ইউআরএল (URL=Uniform Resource Locator) আবিষ্কার করলে, গুগল এটি ভিজিট করে অথবা ক্রল করে, ওয়েবপেজ এ কি আছে তা খুঁজে বের করার জন্য। গুগল ঐ ওয়েবপেজ টি পুরোপুরিভাবে রেন্ডার (Render) করে এবং এর টেক্সট এবং নন-টেক্সট বিষয়বস্তু এবং সার্বিক ভিজুয়াল লেআউট বিশ্লেষণ করে গুগল সার্চ এ ওয়েবপেজ টি কোথায় প্রদর্শিত হতে পারে তা নির্ধারণ করে। গুগল আপনার ওয়েবসাইট কে যত ভালভাবে বুঝতে পারবে, ঠিক তত ভালভাবে আপনার ওয়েবসাইট কে যারা সার্চ করে তাদের কাছে পৌছে দিবে।
একটি সুন্দর সাইট ক্রলিং এর জন্য:
– গুগল যেন ওয়েবপেজ এ ঠিকমত ভিজিট করতে পারে এবং কন্টেন্ট যেন গুগল এর কাছে সঠিক বলে মনে হয়। এর জন্য গুগল এর কাছে সকল ইমেজ এবং ওয়েবপেজ এর অন্যন্য উপদান যেন দৃশ্যমান থাকে সেইভাবে ওয়েবসাইট কে প্রস্তুত করতে হবে। ওয়েবসাইট টি অবশ্যই মোবাইল ফ্রেন্ডলি হতে হবে।
-কোন ওয়েবপেজ নতুন করে তৈরী করলে বা হালনাগাদ করলে সাথে সাথে গুগল এ ওয়েবপেজ এর ইউআরএলটি সাবমিট করতে হবে।
– আপনি যদি গুগল কে শুধুমাত্র একটি ওয়েবপেজ ক্রল করতে বলেন, তাহলে আপনার ওয়েবসাইট এর হোম পেজকে কে এই একটি পেজের তালিকায় রাখুন। গুগল এর কাছে আপনার হোম পেজ আপনার সাইটের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পেজ। কাজেই এটা নিশ্চিত করতে হবে যে আপনার হোমপেজে একটি ভাল সাইট নেভিগেশন সিস্টেমস রয়েছে যা আপনার সাইটের এর সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ এবং পেজের সাথে লিঙ্ক করে।
-গুগল ইতোমধ্যে যে সকল ওয়েবপেজ কে ক্রল করছে সেসকল পেজ কে আপনার ওয়েবসাইট এর সাথে লিংক করতে হয়।
যাইহোক, লিংক করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। যেমন: বিজ্ঞাপনের লিঙ্ক, অন্য এমন কোন ওয়েবসাইট যেখানে আপনি লিংক এর জন্য অর্থ প্রদান করেন, কমেন্টস লিংক, অথবা গুগল ওয়েব মাষ্টার গাইডলাইন (Webmaster Guideline) অনুসরণ করে না এমন অন্যান্য লিংক। এ সকল লিংক কে গুগল অনুসরণ করে না বরং জরিমান (Penalty) করে।
গুগল কোনো সাইটকে ঘন ঘন ক্রল এবং র্যাংক করার জন্য পেমেন্ট গ্রহণ করে না। যদি কেউ আপনাকে এধরনের কিছু বলে থাকে তবে সেটা ডাহা মিথ্যা কথা।
ইনডেক্সিং (Indexing): কোন পেজ খুজ পাওয়ার পরে, গুগল বোঝার চেষ্টা করে যে পেজের এর বিষয়বস্তু কী? পেজের এর বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ করে, পেজে এমবেডেড করা ছবি এবং ভিডিও ফাইলগুলি ক্যাটালগ করে এবং গুগল ইনডেক্স এ সংরক্ষন করে এটাই ইনডেক্সিং। গুগল ইনডেক্স অনেক, অনেক (অনেক!) কম্পিউটারে সংরক্ষিত একটি বিশাল ডাটাবেইজ।
একটি সুন্দর ইনডেক্সিং এর জন্য:
– সংক্ষিপ্ত, অর্থপূর্ণ পেজ টাইটেল ।
-বিষয়বস্তুর হেডলাইন এমন হতে হেবে যেন হেডলাইন বিষয়বস্তুর প্রতিনিধিত্ব করে।
– বিষয়বস্তু বোঝাতে ছবির পরিবর্তে টেক্সট ব্যবহার করা ভাল। কারন গুগল অল্প কিছু ছবি এবং ভিডিও বুঝতে পারে কিন্তু গুগল সব ধরনের টেক্সট বুঝতে পারে । ছবি আর ভিডিওর ক্ষেত্রে অবশ্যই অল্ট টেক্সট (alt text) ব্যবহারর মাধ্যমে বর্ননা দেওয়া উচিত।
ক্রলিং এবং ইনডেক্সিং এর কিছু পদ্ধতি
একটি ওয়েবসাইট এর নতুন পেজকে ইনডেক্সিং করার বিভিন্ন উপায় রয়েছে। আমি বলছি, এটা কোন কঠিন কাজ না। বর্তমানে ধাপে ধাপে কতগুলো পদ্ধতি অবলম্বন করে কাজটি খুব সহজে করা যায়। নিচে কয়েকটি প্রধান পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা হলো:
১.এক্সএমএল সাইটম্যাপ (XML SITEMAPS):
প্রতিটি ওয়েবসাইট এর এক্সএমএল সাইটম্যাপ (XML SITEMAPS) আছে। যদি না থাকে আপনাকে অবশ্যই আপনার সাইটের জন্য এক্সএমএল সাইটম্যাপ (XML SITEMAPS) প্রস্তুত করতে হবে।
এক্সএমএল সাইটম্যাপ (XML SITEMAPS) সম্পর্কে জানতে এবং প্রস্তুত করতে এই লিংকে কিক্ল করুন।
ওয়েবসাইট এর এই এক্সএমএল সাইটম্যাপ (XML SITEMAPS) কে গুগল এর সাথে সংযুক্ত করতে হয় ইনডেক্সিং এর জন্য।
আর এই সংযোগের কাজটি অনায়াসে গুগল সার্চ কনসোল (Search Console) এর মাধ্যমে করা হয়।
গুগল সার্চ কনসোল (Search Console) সম্পর্কে জানতে এবং প্রস্তুত করতে এই লিংকে কিক্ল করুন।
আমরা জানি একটি ওয়েবসাইট একাধিক ওয়েবপেজ এর সমষ্টি যেখানে একটি ওয়েবপেজ আর একটি ওয়েবপেজ এর সাথে ইন্টার্নাল লিংক (Internal Link) এর সাহায্যে সংযুক্ত থাকে। এক্সএমএল সাইটম্যাপ (XML SITEMAPS) এই সকল ওয়েবপেজ এর একটি তালিকা সহ অন্যান্য অতিরিক্ত কিছু বিবরণ (যেমন: এটি কখন সর্বশেষ সংশোধন করা হয়েছিল।) গুগল সার্চ ইঞ্জিনকে প্রদান করে ।
তবে তাৎক্ষনিকভাবে ইনডেক্সিং করার ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়াটি কাজ করবে না।
২. গুগল সার্চ কনসোল (Search Console) এ ইনডেক্সিং অনুরোধ করা:
এই পদ্ধতিতে আপনি সরাসরি গুগল সার্চ কনসোল (Search Console) এ প্রবেশ করে আপনার ওয়েবসাইট এর পেজ এর ইউআরএল (URL) সরাসরি ব্যবহার করে গুগলকে ইনডেক্সিং এর জন্য অনুরোধ করতে পারবেন।
সার্ভিং (Serving): একটা কথা সবসময় ভালভাবে মনে রাখতে হবে গুগল সর্বদা বিষয় সংগতি এবং জনপ্রিয়তাকে কে মূল্যায়ন করে। যখন কোন ব্যবহারকারী কোন অনুসন্ধান করে তখন গুগল এর ইনডেক্স হতে সবচেয়ে সংগতিপূর্ন (প্রায় ২০০ টি বিষয়ের এর উপর বিবেচনা করে) উত্তরটি ব্যবহারকারীকে কে প্রদান করে।
একটি সুন্দর সার্ভিং এবং র্যাংকিং এর জন্য:
-আপনার পেজটি যেন মোবাইলে ব্যবহারোপযোগী এবং পেজ লোডিং টাইম যেন সর্বনিম্ন হয়।
-পেজ কন্টেন্ট যেন বিষয়ভিত্তিক হয় এবং সবসময় যেন হালনাগাদ থাকে।[/vc_column_text][/vc_column][/vc_row]